যদিও এটি পুরোপুরি নিশ্চিত ছিল না যে তিনি এটি ফেরত পাঠাবেন। পরিবর্তে আমি তাকে একটি দীর্ঘ চিঠি পাঠিয়েছিলাম – কারণ আমি জানতাম একমাত্র আমার দীর্ঘ চিঠিগুলিই তার মস্তিষ্কের বিনোদন দেয়। চার পাউন্ডের মধ্যে, আমি দুই পাউন্ড সংরক্ষিত রেখেছিলাম নিজের যেকোনো আনুষঙ্গিক খরচের জন্য, এবং অবশিষ্ট দুই পাউন্ড এলিজাকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি শুধুমাত্র সেগুলিকে তার হাতে তুলে দিতে চাইনি, কোনো এক আকস্মিক উপায়ে তাকে চমকে দিতে চাচ্ছিলাম।
এর আগেও আমি এই ধরনের কিছু চেষ্টা করেছিলাম। এলিজা একবার আমার কাছে তার দেখা একটি নতুন চা-দানির জন্য ছয় শিলিং চেয়েছিল। আমি গিয়ে তার চেয়ারের পিছনে দাঁড়ালাম, এবং বললাম, “না, সোনা, আমি এটা ভাবতেই পারিনা,” একই সময়ে অগোচরে তার ঘাড়ের পিছনে ছয়টি শিলিং নামিয়ে দিলাম। এলিজা পরদিন সকালে বলেছিল, এটা খুবই দুঃখের বিষয় যে তাকে সকাল নয়টায় সিঁড়ি বেয়ে জামা কাপড় খুলতে বাধ্য না করে, আমি তাকে চা-দানির জন্য ছয় শিলিং দেইনি। বলাই বাহুল্য পদ্ধতিটি খুব একটা কাজে দিয়েছিল না।
যাইহোক, আমার মাথায় একাধিক ধারণা ছিল। এইবার আমি ভাবলাম প্রথমে খুঁজে বের করব সে আসলে কিছু চায় কিনা।
তাই রবিবার চা খেতে খেতে, আমি যেন বিশেষভাবে কিছু বোঝাতে চাচ্ছিলাম না এমন উদাসীন ভাব করে বললাম, , “এলিজা, তুমি কি কিছু চাও?”
“হ্যাঁ,” সে বলল; “আমি একজন কাজের লোক চাই যে সাড়ে নয়টায় বিছানায় যাবে এবং সাড়ে পাঁচটায় উঠবে। তারা যদি কেবল আমার জন্য এতটুকুই করে তবে এটিই আমার সকল চাওয়া।”
“কিছু মনে করোনা, এলিজা,” আমি বললাম, “কথাটি কিন্তু সঠিক নয়, তুমি বলছিলে এটিই তোমার সকল চাওয়া। আসলে তুমি কি বোঝাতে চাইছ..।”
“তুমি কি জানো আমি কি বোঝাতে চেয়েছি?”
“আমার মনে হয় আমি ভালো করেই জানি…।”
“তাহলে তুমি যদি জানো যে কী বলতে চাইছি, তাহলে আমি অবশ্যই সঠিকভাবেই কথা বলেছি।”
কিন্তু আমরা যখন গির্জায় গিয়েছিলাম তখন আমি বুঝতে পারলাম যে সে আসলে একটি নতুন জ্যাকেট চায়।
পরের দিন সকালে একটা চিরকুটে লিখেছিলাম, “নতুন জ্যাকেট কেনার জন্য। তোমার স্বামীর ভালোবাসার উপহার হিসেবে ।” আমি এর মধ্যে দুটি পাউন্ড ভাঁজ করে, এবং প্যাকেটটি এলিজার পুরানো জ্যাকেটের পকেটে ফেলে দিলাম, কারণ এটি ওয়ারড্রোবে ঝুলছে, এবং আমি কী করেছি তা ওর থেকে অজ্ঞাত রাখলাম। আমার ধারণা ছিল যে সে সকালে কেনাকাটা করতে বের হওয়ার জন্য পুরোনো জ্যাকেটটি পরবে, এবং পকেটে হাত রাখলে একটি আনন্দদায়ক অনুভূতি পাবে। আমি যখন শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছিলাম, তখন সে আমাকে জিজ্ঞেস করলো কেন আমি এত রহস্যময়ভাবে হাসছি। আমি উত্তর দিয়েছিলাম, “সম্ভবত তুমিও, দিন শেষ হওয়ার আগে হাসবে।”
ফিরে এসে এলিজাকে সদর দরজায় পেলাম। “আসো, এদিকে দেখো,” সে উজ্জ্বল মুখে বলল। “আমি তোমার জন্য একটি মনোমুগ্ধকর সারপ্রাইজ রেখেছি।” সে ড্রয়িংরুমের দরজা খুলে ইশারা করল। টেবিলের মাঝখানে সবচেয়ে সুদর্শন এবং আকর্ষণীয় স্পাইরিয়া উদ্ভিদ দাঁড়িয়ে ছিল, সেটির পাত্রের চারপাশে কিছু রঙিন কাগজের নকশা এবং খুব সাধারণ ভাবে সেটিকে দেখতে ভালোই লাগছিল। আমি তখনই অনুমান করেছিলাম যে সে তার নিজের উপহারটি কেনার পরে যা বেঁচে গিয়েছিল তা দিয়ে আমার জন্য এই উপহারটি এনেছিল, এবং ভেবেছিলাম তার হয়তোবা খুব ভালো অনুভূতিই হচ্ছে এতে।
“আমি আশা করি তুমি এর জন্য খুব বেশি কিছু খরচ করোনি,” আমি বললাম।
“আমি এর জন্য কোন টাকা দেইনি।”
“আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।”
“ঠিক আছে, তুমি নিশ্চয়ই জানো যে আজ সকালে আমি একটি উপহার পেয়েছি।”
“অবশ্যই আমি জানি।”
“মা তোমাকে বলেছে? হ্যাঁ, সে আমাকে একটি সুন্দর নতুন জ্যাকেট পাঠিয়েছে। তারপর একজন লোক গাছের চারা নিয়ে ঘুরতে এলো, এবং সে বলল আমার কাছে কোন পুরোনো কাপড় থাকলে তার আর কোনো টাকা চাই না। তাই আমি তাকে এই স্পিরিয়ার জন্য আমার পুরানো জীর্ণ জ্যাকেট দিলাম , এবং…“
আমার মনে পড়ল যে আমি রাস্তার নিচে চারা-গাছওয়ালা লোকটিকে দেখেছিলাম।
“এক মুহুর্তের জন্য আমাকে একটু সময় দাও, এলিজা,” আমি বললাম, এবং সেই লোকের পিছনে ছুটলাম।
******
তিনি একজন বড়, লাল মুখের মানুষ ছিলেন এবং তিনি এই ঘটনা সম্পর্কে কোনও অসুবিধাও তৈরি করলেন না।
“হ্যাঁ,” তিনি বললেন, “আমি অস্বীকার করি না যে আমি সেই জ্যাকেটটি কিনেছি। সেটি এখোনো আমার বাক্সের নীচেই রয়েছে এবং আমি তখন থেকে এটির দিকে একবারও তাকাইনি। আমি এখনও দেখতে যাচ্ছি না। আপনি বললেন পকেটে দুই পাউন্ড ছিল। আপনার মতো ভদ্রলোককে, আমার মতো একজন সাধারণ মানুষ প্রতারণা করতে চান না। যদি আপনি বলে থাকেন যে দুই পাউন্ড ছিল সেখানে, তাহলে সেগুলো এখনও সেখানে আছে, এবং আমি এক্ষুনি আমার জ্যাকেটের পকেট থেকে আপনাকে দুই পাউন্ড ফিরিয়ে দিতে পারব। আমি আপনাকে বিশ্বাস করেছি! আপনাকে দেখেই আমি অনুমান করতে পারি আপনি অবশ্যই একজন সৎ লোক।”
এই কথাগুলো বলে সে তার নিজের জ্যাকেটের পকেট থেকে টাকাটা বের করে আমার হাতে দিল এবং আমি কিছুটা অনিচ্ছা থাকা সত্তেও সেটি গ্রহণ করলাম।
“আপনার কি উচিত নয় একটু যাচাই করে নেয়া..”
“একটু না,” তিনি বলেন। “যদি জ্যাকেটটি আমাকে দেয়ার সময় সেখানে বস্তুটি থেকে থাকে তবে, তারা এখন সেখানে আছে। আমি দেখতে পাচ্ছি যে আপনি একজন বিশ্বস্ত মানুষ, অন্যথায় আমি অনেক আগেই বাক্সটি এখানে এনে অনুসন্ধান করতাম।
******
“তুমি কোথায় গিয়েছিলে?” আমার ফেরার পর এলিজা বলল।
ঘটনাটি এড়িয়ে যাবার জন্য বললাম- “কিছু মনে করো না, তোমার মা তোমাকে একটা নতুন জ্যাকেট দিয়েছে। আমি তোমাকে একটি নতুন টুপি দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছি।” এবং তারপরই আমি কয়েন দুটো ওর হাতের তালুতে চেপে দিলাম।
এলিজা সেগুলোর দিকে তাকিয়ে বলল, “তুমি অবশ্যই জানো যে একটি হাফ পেনি শুধুমাত্র টুপির জন্যই হতে পারেনা। লক্ষীটি, তুমি এই মুহূর্তে কি নিয়ে তাড়াহুড়ো করছিলে? এবং কেন এই সোনায় মোড়ানো পেনি দুটি আমায় দিচ্ছ? তুমি এদের মূল্য সম্পর্কে সতর্ক না হয়েই আমাকে দিয়ে দিচ্ছ না তো? হায়, তুমি এ কিসের মধ্যে দিয়ে আমায় নিয়ে যাচ্ছ।”
আমি এক মুহুর্তের জন্য কী বলব তা খুঁজে পেলাম না, এবং তাই আমি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলাম যে এটি শুধুমাত্র একটি রসিকতা ছিল।
“কিন্তু তুমি মজা করছো বলে মোটেও মনে হচ্ছে না আমার।”
“কিন্তু আমি তো ছিলাম। আমি মনে হয় আমার জানা উচিত যদি তুমি কিছু করে থাকো। যাইহোক, এলিজা, তুমি যদি অর্ধেক পেনি দিয়ে একটি নতুন টুপি চেয়েই থাকো তবে সেটা সরাসরি বলাই ভালো।”
সে এটা বলল, তারপর আমাকে ধন্যবাদ জানালো, এবং আমাকে এসে তার সাথে সেই স্পিরিয়াকে পানি দিয়ে সাহায্য করতে অনুরোধ জানালো।
“এটা খুবই সুন্দর একটা উদ্ভিদ ,” এলিজা বলল।
“হ্যাঁ,” আমি দুঃখের সাথে উত্তর দিলাম, “এটি খুব মূল্যবানও বটে”।
নামঃ উম্মে উমারা ইমুবি
এ অনার্স, দ্বিতীয় বর্ষ, ইংরেজী বিভাগ
প্রতিষ্ঠানের নামঃ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
ই-মেইল: emu10-671@diu.edu.bd
গল্পের নামঃ “দ্যা প্লেজন্ট সারপ্রাইজ”
লেখকের নামঃ ব্যারি পেইন
মূল গল্পের উৎসঃ http://fullreads.com/literature/the-pleasant-surprise/