মৃদুলয়ে, গোধুলীলগ্নে, সে শোনায় এক গান।
আবহমান স্মৃতির পাতায় ভেসে যায় প্রাণ।
শিশু একা বসে, পিয়ানোর ঠিক পাশে,
উদ্দাম সূরে মাতৃচরণ ধরে ঝাপটে, মা গায় আর হাসে।
ছাড়িয়ে আমার মন, সেই মোহময়ী সূর,
স্মৃতির অতলে দেয় ডুবিয়ে, দূর বহুদূর।
হারিয়ে ফেলা শীত আর বিকেলের অবকাশ,
পিয়ানোর সূরে পেতাম খুজে স্বপ্নের আকাশ।
কোথাও আজ বাজেনা সেই প্রিয় সূর আর সংগীত,
আজিকের দিনে কেউ কি আছে গাইবে এমন গীত?
শৈশবের মধুর স্মৃতিতে ঢাকা পড়ে যায় এ মন,
প্লাবিত মোহে ফিরে যেতে সেই দিনে কাঁদি আমি শিশুর মতন।
অনুবাদকঃ মোঃ আসিফ ইকবাল সৈকত। জন্ম বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার ছায়ানীড় একটি গ্রামে। রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি পড়াশোনা করছেন। ছোটবেলা থেকেই একধরনের কবিতা প্রেম। কবিতা পড়ার থেকে কবিতা শুনায় ভিষণ ভালো লাগে। প্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুন এবং জীবনান্দ দাশ।
মূল কবিতাঃ
আলোচনাঃ
পিয়ানো কবিতাটি ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন প্রসিদ্ধ ইংরেজ লেখক, কবি, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক ডেভিড হারবার্ট রিচার্ডস লরেন্স তথা ডি এইচ লরেন্স এর। কবিতাটি লেখা হয় ১৯১৮ সালে। কবি এখানে নিজের দৃষ্টিকোন থেকে কবিতাটি লিখেছেন। কবি নিজের জীবনের শৈশবের স্মৃতি বর্ণনা করছেন। কবিতার শিরোনাম পিয়ানো এখানে রূপক হিসেবে ব্যাবহার হয়েছে।
কবি সম্পর্কেঃ
ডেভিড হারবার্ট রিচার্ডস লরেন্স, যিনি ডি. এইচ. লরেন্স নামে সমধিক খ্যাত, ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন প্রসিদ্ধ ইংরেজ লেখক, কবি, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক। সাহিত্য সমালোচকদের মতে, তার রচনাবলি আধুনিকায়ন ও শিল্পায়ন প্রসূত মানবিক অবক্ষয়ের দিকটি বিশদভাবে প্রতিফলিত করে। তার রচনায় লরেন্স মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য ও তার গুরুত্ব, স্বাভাবিকতা, ও মানব জীবনে যৌনপ্রবণতার ভূমিকা প্রভৃতি বিষয়কে উপজীব্য করেছেন। তার অন্যতম বহুল পঠিত উপন্যাস হলো লেডি চ্যাটার্লীয লাভার যা তৎকালে অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত ছিল। ডি.এইচ. লরেন্স জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া স্ট্রিটে। তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। উল্লেখ্য, ডি.এইচ. লরেন্স ১৯৩০ সালের ২ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। বিশ্বসাহিত্যে, কথাশিল্পে ডি.এইচ. লরেন্স বহুল আলোচিত-সমালোচিত সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত।