1. noorazman152@gmail.com : নূর আজমান : নূর আজমান
  2. asifiqballimited@gmail.com : Asif Iqbal : Asif Iqbal
  3. khansajeeb45@gmail.com : সজিব খান : সজিব খান
  4. naeemnewsss@gmail.com : সাকিব আল হেলাল : সাকিব আল হেলাল
  5. khoshbashbarta@gmail.com : ইউনুছ খান : ইউনুছ খান
সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন
খোশবাস বার্তা

বরিশালে ইমামকে জুতার মালা পরিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০
  • ১৯০৬ বার পঠিত
বরিশালের
ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় এক শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মসজিদের ইমাম ও দড়িচর খাজুরিয়া দাখিল মাদরাসার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর শহিদুল ইসলামকে জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই দৃশ্য ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে তাকে জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানোর আদেশ দেওয়া হয় বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। বুধবার সকালে দড়িচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

লাঞ্ছনার শিকার শহিদুল ইসলাম দড়িচর খাজুরিয়া দাখিল মাদরাসার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এবং স্টিমারঘাটের অদূরে সিকদার বাড়ি মসজিদের ইমাম। এই ঘটনায় বুধবার রাতে লাঞ্ছনার শিকার শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

মামলায় দড়িচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ি, সত্তার সিকদার, কবির সিকদার, ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শহিদুল ইসলাম, মাসুদ সিকদার, আবুল বয়াতী, ইউনুস বয়াতী, মোসলেম সিকদার, বজলু আকন ও মশিউর রহমান বয়াতীকে অভিযুক্ত করা হয়।

এদের মধ্যে বজলু আকনকে বৃহস্পতিবার দুপুর পৌঁনে ১টায় স্থানীয় দড়িচর খাজুরিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দড়িচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ির নির্দেশে তার কার্যালয়ে সালিশ বসানো হয়। এ সময়  ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বর) শহিদুল ইসলাম, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বর) মো. ফিরোজ,  বজলু আকন, আবুল বয়াতী, মো. কামরুজ্জমান, রিন্টু দেওয়ান সহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

মাদরাসার একাধিক শিক্ষক জানান, ২০১৯ সালে উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মোবাইল হিসাব নম্বর পাঠানো হয়। তালিকা পাঠানোর সময় ৬ষ্ঠ শ্রেনীর এক ছাত্রী মাদ্রাসায় না আসায় সেখানে শহিদুল ইসলাম তার মোবাইল নম্বর দিয়ে দেন। সম্প্রতি ওই ছাত্রীর এক বছরের উপ বৃত্তির ১৮শ টাকা ওই মোবাইল নম্বরে জমা হয়। বিষয়টি শহিদুল ইসলাম এর বন্ধ থাকায় তিনি জানতে পারেন নি এবং পরদিনই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের উল শিকার করেন।

খোশবাস বার্তা

তবুও ওই ছাত্রীর বাবা ৩০ মে মাদরাসায় এসে শহিদুল ইসলামকে মারধর করেন এবং তার মোবাইলের সিমটি নিয়ে যান।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়। বিষয়টি জানতে পেরে চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ি সালিশের নির্দেশ দেন। বুধবার সকাল ১০ টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে উপস্থিত থাকতে আগেই শহিদুল ইসলামকে জানিয়ে দেয়া হয়। সালিশ বৈঠকে উপস্থিত হলে শহিদুল ইসলামকে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়া হয়। এরপর জুতার মালা পরিয়ে স্টিমারঘাট বাজারে ঘোরানো হয়। এ ঘটনার পর লজ্জা ও অপমানে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন শহিদুল ইসলাম।

দড়িচর খাজুরিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার আনিসুর রহমান জানান, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। তবে শুনেছি চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ির নির্দেশে শহিদুল ইসলামকে জুতার মালা পরিয়ে স্টিমারঘাট বাজারে ঘোরানো হয়েছে। এটা উচিত হয়নি। শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে তারা মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারতেন।

লাঞ্ছনার শিকার শহিদুল ইসলাম জানান, ওই ছাত্রীর উপবৃত্তির টাকা যে সিমে এসেছে, সেই সিমটি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। আর অফিসে নানা কাজের চাপে বিষয়টি মনেও ছিল না। কিন্ত এত ছোট একটি বিষয় নিয়ে এত কিছু হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি।  দীর্ঘ কর্ম জীবনে কেউ কোনদিন অভিযোগ করতে পারেনি। কিন্ত সামান্য একটি ভুলের জন্য যে অবিচার আমার ওপর করা হয়েছে তাদের বিচার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিলাম।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিযুষ চন্দ্র দে জানান, “রাতে ঘটনাটি জানতে পারি। সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রতক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে রিপোর্ট দিতে বলেছি।”

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তপন কুমার দাস জানান, “উপবৃত্তির টাকা নিয়ে যাই হোক,তার বিচারের এখতিয়ার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নেই। যা ঘটেছে তা লজ্জাজনক। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আজ সকাল ১০ টায় জরুরি সভা তলব করেছেন। সেখানে পরবর্তী করনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। প্রয়োজনে এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।”

অভিযুক্ত দড়িচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ি জানান, শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি দুই ছাত্রীর উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া তিনি একটি ইন্সুরেন্স কোম্পনিতে চাকরি করেন। কয়েকগুণ টাকা মুনাফা দেওয়ার কথা বলে লোকজনদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি বরিশাল নগরীতে ৩০ লাখ টাকার জমি কিনেছেন। তার এসব কর্মকাণ্ডের কারণে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিশ বৈঠক করেছেন। সালিশ বৈঠকে তাকে ওই সব টাকা ফিরিয়ে দিতে বলা হয়। তিনি অপারগতা প্রকাশ করে নিজেই জুতার মালা পরেছেন।

এদিকে, মসজিদের ইমামকে অপমান-লাঞ্ছিত করার ঘটনায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

খোশবাস বার্তা

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
corona safety
সত্বাধিকার © খোশবাস বার্তা ২০১৬- ২০২১
ডেভেলপ করেছেন : TechverseIT
themesbazar_khos5417