ওই ফ্ল্যাট থেকে দুই তিন দিন ধরে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। বিষয়টি অন্য ভাড়াটিয়ারা বাড়ির মালিককে জানালে প্রথমে আমলে নেননি তিনি। পরে দুর্গন্ধের মাত্রা বাড়লে বাড়ির মালিক শনিবার রাতে পুলিশের সহায়তায় দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করলে খাটের নিচে অর্ধগলিত অবস্থায় পাওয়া যায় সাইফুল ইসলামের লাশ। জানা যায়, গত ১ জুন ইন্টারনেট ব্যবসায়ী পরিচয়ে আপেল আহমেদ নামে একজন পূর্ব সাঈদ নগরের মসজিদ গলির ওই বাসার দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। বাড়ির মালিককে জমা দেওয়া তথ্য বিবরণী থেকে জানা যায়, আপেলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ।
বাড়ির মালিক লাকি আক্তার ও অন্য বাসিন্দারা জানান, গত ২৪ জুন রাতে ওই ফ্ল্যাটে ধস্তাধস্তির আওয়াজ শুনতে পান তারা। পরে সেখানে গেলে দরজা না খুলে ভিতর থেকে আপেল ও তার স্ত্রী শান্তা বেগম বিষয়টি নিজেদের ব্যক্তিগত বলে অবহিত করেন। পরদিন ভোরে বাসা থেকে লাপাত্তা হয়ে যান তারা।
ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান বলেন, শুক্রবার রাতে নিহত সাইফুলের গাড়িটি ভাটারার একশ’ ফুট সড়কে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। গাড়িটি তার পরিবারের সদস্যদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওসি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে আপেল ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বাসায় তালা লাগিয়ে পালিয়েছেন। তার সঙ্গে আরও সহযোগী থাকতে পারে। আপেলকে গ্রেফতার করতে পারলেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।
সাইফুলের স্ত্রী দীনারা পারভীন জানান, তাদের বাসা হাজারীবাগ থানাধীন পশ্চিম ধানমণ্ডির ৯/এ নম্বর সড়কে। বাসা নম্বর ১৪১। তার স্বামী সাইফুল রেন্ট এ কার এবং জমির ব্যবসা করতেন। গত বুধবার সাইফুল নিজের প্রাইভেটকার নিয়ে বাসা থেকে বের হন। রাত সাড়ে ৯টায় তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজাখুজি করে না পেয়ে হাজারীবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
রোববার সকালে খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন তিনি।
দীনারা পারভীন বলেন, ‘ভাটারার যে বাসায় আমার স্বামীর লাশ পাওয়া গেছে ওই বাসার ভাড়াটে আপেল আহমেদকে আমি চিনি না। তার সম্পর্কে আমার স্বামীর কাছ থেকেও আগে কখনো কিছু শুনিনি। ওই বাসায় কেন, কীভাবে গেলে তা আমার জানা নেই। তবে নিশ্চিত যে, ওই বাসার লোকজনই আমার স্বামীকে খুন করেছে।’