ফরটিসের বিলকাণ্ড এখানেই শেষ নয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে বিল পাঠানোর পাশাপাশি তারা প্রত্যেক রোগীর আলাদা আলাদা বিল বানিয়ে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছেও রোগীপ্রতি ১২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৬ টাকা করে দাবি করে বসেছে! সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফরটিস হাসপাতালের এই ‘বিস্ময়কর বিল’ পরিশোধের প্রক্রিয়াও নাকি শুরু হয়ে গেছে।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘২২ দিন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারী সরবরাহ করেছি আমরা। ৩ জুন কুমেক হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালুর সময় ফরটিস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ওই সময় স্থানীয় এমপি তাদের জানিয়ে দেন, করোনা প্রতিরোধে জেলা স্বাস্থ্য কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের হাসপাতালের আইসিইউ ব্যবহার করা হয়েছে। মানবতার সেবায় এগিয়ে আসায় তাদের ধন্যবাদও জানানো হয়।’ তিনি বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো বিল দেওয়ার কথা বা চুক্তি হয়নি।’
হাসপাতালটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কন্সালটেন্ট কার্ডিওলোজি ডা. সাঈদ আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ‘উল্লেখিত সময়ে আমরা ১৯জন করোনা রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছি, এদের মধ্যে ৪জন রোগী মারা গেছেন। এদের চিকিৎসা, থাকা, ঔষধপত্র বাবদ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ ১২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৬ টাকার বিল দাখিল করা হয়েছে।’
অপর এক প্রশ্নে তিনি জানান, ‘আমাদের হাসপাতালের ঢাকাস্থ প্রধান কার্যালয় থেকে এ হাসপাতালের একটি বড় কক্ষে ১০ বেডের আইসিইউ, ভেন্টিলেটার স্থাপনসহ আনুষাঙ্গিক খরচ বাবদ ৫ কোটিরও অধিক টাকা খরচ হয়েছে এবং এ বাবদ বিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দাখিল করা হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। বিষয়টি আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন। এর বেশি কিছু বলতে পারবো না। তবে আমাদের হাসপাতালে জিএম অপারেশন তৌফিক হাসান এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।’ পরে জিএম অপারেশন তৌফিক হাসানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করেও রিসিভ না হওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাইদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালান ফরটিস হাসপাতালে। পরে ফার্মেসিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ, আমদানিবহির্ভূত ও নিবন্ধনবিহীন ওষুধ পান তাঁরা। পরে ফরটিস হাসপাতালের ফার্মেসিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত।