টেলিভিশন চ্যানেল বা সংবাদমাধ্যম হতে আপনি করোনা আক্রান্ত হবেন না কিন্তু মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হবে কারণ সাংবাদিকদের কণ্ঠঘিরে থাকে বিষণ্ণতা। কণ্ঠের শ্লেষ্মায় থাকে কুয়াশা মোড়ানো উত্তরীয়।
অবশ্য সংবাদের উপকরণ যদি বঙ্গভূমি হয় তবে আপনি বিশ্বজয়ের খবরই বা পাবেন কীভাবে। এদেশে কেউ একজন বিশ্বজয় করলে অন্যের ঘরে আগুন জ্বলে ওঠে। অন্যের বনভূমিতে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির বিকিরণ আপনার মাঠেঘাটে ও বাটে মরুতাপ বইয়ে দেবে।চোখে তখন ধূ ধূ বালুকা ভিন্ন কিছু থাকে না।জাফরুল্লাহরা র্যাপিড ডট ব্লটে-লুটে নেওয়া রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির সৎ ও সুষম যোগান দিলে তাদের বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে কিট নীরিক্ষার অহেতুক কাল বিলম্ব হবে-ভবিষ্যতে কেউ যেন রাষ্ট্রের সম্পত্তি লুটে খাওয়ার পথ রুদ্ধ করতে না পারে।
কোনটি পজেটিভ আর কোনটি নেগেটিভ তা নেক্সট জেনারেশনের বোধগম্যতায় অনাবৃষ্টির মতই ঠেকবে। একটি বৃক্ষ মাটির প্রকৃত যে নির্যাস তা খুইয়ে কেবলই সার মশলায় টিকে থাকবে। ঝড়-ঝঞ্ঝায় সেই বৃক্ষের মস্তক নুইয়ে পড়বে পাকা বাঁশের কড়কড় শব্দের ন্যায়।
সংবাদমাধ্যম সৃজনশীল কর্মপ্রণালী নিরূপণে রাষ্ট্রের চতুর্থ বৃহৎ শক্তি। রাষ্ট্রের জনগণে রুচিহীন স্থূল মানসিকতা বদ্ধমূলসহ উপড়ে ফেলার পাইওনিয়ার হচ্ছে সংবাদমাধ্যম। ক্ষয়িষ্ণু ও খসে পড়া তারকার বিচ্ছিন্নতা বিলোপে সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের উদার শিক্ষাব্যবস্থার মতই রাখতে পারে অগ্রণী ভূমিকা। অমাবস্যার রাতে পুষ্করিণীর স্বচ্ছ জলের দেহেও কালো নেকড়ের কৃষ্ণচিহ্ন পরিলক্ষিত হবে । যে কৃষ্ণস্রোতে ভেসে যাবে সকল ন্যায়, মমতা, সদয় ও উজ্জ্বল জোনাকির জ্যোতি। আপনি যখন জাতির সুকুমার বৃন্তটিকে কালোজলের পঙ্কিলতায় স্নান দেবেন তখন বৃন্তচ্যুতি ভিন্ন তার ফল কিই বা হতে পারে! জাতির মন, মনন ও মনীষার বাড়ন, ফলন ও উল্লম্ফনে স্থানচ্যুতিই তার পরিণতি।
বঙ্গভূমির মাটিক্ষয়তো এখানেই। বিরাট অট্টালিকার গোড়ায় কেবল সার মশলা দিয়েতো আর তার জৈব সার বা হিউমাসের পরিপুষ্টি লাভ বৃথা রোদনের নামান্তর। জমিতে আপনি দীর্ঘদিন নাইট্রোজেন, পটাশ আর কীটনাশক ছিটালে তার উর্বর ক্ষমতা হ্রাস পাবেই। সমতা বিধানের জন্য হয় কৃত্রিম সার প্রয়োগের মাত্রা হ্রাস করতে হবে নচেত জৈব সার বা হিউমাসের মান বৃদ্ধি করতে হবে। প্রাকৃতিক যেকোনো কিছু কৃত্রিম বস্তুর চেয়ে টেকসই। নেগেটিভ সংবাদ আমাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি নয় রোধ করে। হানাহানি, জোচ্চুরি,রক্তপাত ও মৃত্যু আমাদের মগজ ও মনে স্থায়ীভাবে আসন গেড়ে বসতে সংবাদমাধ্যমের রয়েছে কার্যকরী ভূমিকা।
সকালের অরুণ আলোর ঝলমলে পৃষ্ঠায় নিয়ত লুণ্ঠন আর কলুষ কীর্তি আপনার মানসিক অবদমন ও মূল্যবোধ বিনষ্টকরণে যে মহৌষধ-এর কাজ করবে টেলিভিশন চ্যানেল বা সংবাদমাধ্যম তখন দূরদর্শন নয় কুকীর্তি দর্শনের অবলম্বন। আমাদের চ্যানেল বা সংবাদপত্র করোনার নিষ্পেষণে পিষ্ট। সে পিষ্ট সড়কের চাকায় পিষে গিয়ে। যে সংবাদগুলো ইতিবাচক তা নেগেটিভ দৃষ্টিচর্চার আস্তিনে পরিব্যাপ্ত যা আমাদের মানসিক ভ্রম বা বিকৃতি ঘটায়। টেলিভিশন আর তার সহোদরাদের সনে ছেদ ঘটানোই তখন মানস ও মনোমুক্তির কীয়ৎকালের মোক্ষম ঔষধ।