করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ এবং ভর্তিতে বাধা কাটলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের। আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ বিষয়ে সকলেই একমত হন। তবে অনলাইনে কিভাবে পরীক্ষা গ্রহণ ও ভর্তি করা হবে সে ব্যাপারে আগামী সপ্তাহে বিস্তারিত গাইডলাইন প্রকাশ করবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি। এরপর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেই গাইডলাইন অনুযায়ী অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণ এবং শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতে পারবে।
বৈঠক শেষে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা আগে চিন্তা করেছিলাম ঈদের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলতে পারবো। এজন্য তাদেরকে শুধু অনলাইনে ক্লাস নিতে বলেছিলাম। কিন্তু এখন বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে আরো দেরি হতে পারে। এজন্য তারা অনলাইনে কিভাবে ক্লাস ও পরীক্ষা চলমান রাখতে পারে সে ব্যাপারে আমরা একটি গাইডলাইন প্রকাশ করব। এর ভিত্তিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুধুমাত্র চলমান সেমিস্টারের জন্য অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে।
আজ বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক এএসএমম মাকসুদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামীতে সবকিছুই অনলাইনে হবে। সে বিষয়ে সরকারি বেসরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ছুটিতে সষ্ট পরিস্থিতি, লেখাপড়ার ক্ষয়ক্ষতি, ভবিষ্যতে করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এই বৈঠকের উপর ভিত্তি করে ইউজিসি আগামী সপ্তাহে একটি নির্দেশনা জারি করবো। এতে ছুটি দীর্ঘায়িত না হলে ক্যাম্পাসভিত্তিক বর্তমান কাঠামোর আলোকে ব্যবস্থার লেখাপড়া, পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম চালানো এবং দীর্ঘায়িত হলে কী করতে হবে সে ব্যাপারে বলা থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, অনলাইনে লেখাপড়া চালিয়ে নেয়ার জন্য কী করা যায় সে ইতিমধ্যে ডিনদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা শিগ্রই একটি প্রতিবেদন দেবেন। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের আর্থিক অবস্থার শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে। তাই চাইলে অনলাইনে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা যায় না।
ইউজিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, ৬/৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সক্ষমতা আছে। বাকিদের এই অবকাঠামো ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলতে হবে। বর্তমানে ৫৬ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ বা আংশিক পাঠদান অনলাইনে পরিচালনা করছে।
বৈঠকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অনলাইনে ক্লাস চালানো, ভর্তি ও পরীক্ষা নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া দুর্বল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক সহযোগিতার জন্য স্বল্পসূদে ঋণের ব্যবস্থা করতে ইতিপূর্বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির আবেদনের বিষয়টিও তোলা হয়। এছাড়া বৈঠকে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বেতন পরিশোধের জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে তাগিদ দেয়া হয়।
সমিতির সভাপতি শেখ কবির বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর আগামী দিনের সব কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।