শনিবার (২৭ জুন) শিক্ষা বিটের সাংবাদিকদের এক অংশের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ইরাব) আয়োজিত ভার্চুয়াল সেমিনারে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
‘করোনায় শিক্ষার চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে শিক্ষামন্ত্রী এমন সময় পরীক্ষা নিয়ে এমন পরিকল্পনার কথা জানালেন যখন পার্শ্ববর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গে করোনার কারণে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিলের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। করোনার কারণে স্থগিত থাকা ২, ৬ ও ৮ জুলাইয়ের পরীক্ষা সেখানে হচ্ছে না। ইতোমধ্যেই এ ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে কীভাবে ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ন হবে তা পরে জানানো হবে বলেই জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার নেয়ার পূর্ণ প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। আমি আগেও বলেছি যখনই অনুকূল পরিস্থিতি হবে তার ১৫ দিনের মধ্যে পরীক্ষা নিতে পারব। এই ১৫ দিন শিক্ষার্থীদের নোটিস দিতে হবে। কারণ তাদের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিতে সময় দিতে হবে।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে সিলেবাস কমিয়ে আনার কথা কেউ কেউ বললেও তা নাকচ করে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, এবারের এইচএসসির সিলেবাস কমানোর কোন যৌক্তিকতা নেই, কারণ তারা (শিক্ষার্থী) তাদের তো তাদের সিলেবাস সম্পন্ন করেছে। এখন হতে পারে, যে হ্যাঁ, পাবলিক পরীক্ষা (এইচএসসি) নেয়া হবে, আবার এত লাখ লাখ পরিবার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, এত প্রশাসনের মানুষ, এত শিক্ষক-সবাইকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলব?
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সেটিকে, আমরা কম সময়ে করতে পারি কি না, কম সংখ্যক পরীক্ষা নিতে পারি কি না- আমরা সবকিছুই কিন্তু ভাবছি।’
করোনা সঙ্কটে চলতি শিক্ষাবর্ষ আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, বর্তমান সঙ্কট পুষিয়ে নিতে চলতি শিক্ষাবর্ষ আগামী মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। শিক্ষাবর্ষের ছুটি কমিয়ে শ্রেণী ঘণ্টা বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।
তবে এ ক্ষেত্রে বয়স ও শ্রেণী অনুযায়ী শিক্ষার্থীর জ্ঞানার্জন ও দক্ষতা অর্জনের দিকটি আপোস করা হবে না। যতটুকু না পড়ালে পরবর্তী ক্লাসে ওঠা সম্ভব না হয় সেটিকে গুরুত্ব দেয়া হবে।
গত ১ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশেও শুরু হওয়ার কথা ছিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। তবে দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় মার্চের মাঝামাঝিতেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। যাতে আটকে যায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও। করোনার কারণে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও রয়েছে। করোনার দাপট বাড়তে থাকায় পরীক্ষা নিয়ে উদ্বেগে আছেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর হোসেন এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. ফারহানা খানম। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মুসতাক আহমদ এবং স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক। ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন কোষাধ্যক্ষ শরিফুল আলম সুমন।