কভিড-১৯ এর এই দুর্যোগে জনগন ও অর্থনিতির কথা ভেবে সরকার লকডাউন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত ভুল না সঠিক তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। এদিকে সরকারের অর্থনৈতিক চিন্তার সাথে জড়িয়ে আছে জনস্বাস্থ্য।
করোনা দুর্যোগ ঠেকাতে গত ১৭ই মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হয় আর সাধারণ ছুটি শুরু হয় ২৬ মার্চ থেকে, পরে কয়েক দফায় বাড়িয়ে তা ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়৷ পরবর্তীতে ২৮ মে এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয় ৩০ মে পর আর বাড়ছে না লকডাউন। এতে প্রশ্নের মুখে জনগনের স্বাস্থ্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যার তথ্য অনুসারে এখনি লকডাউন প্রত্যাহার করলে বিশ্বের অবস্থা হতে পারে আরও খারাপ। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশে গত এপ্রিল মাসে করোনা শনাক্ত হয় ৭ হাজার ২৫০ জন, মে মাসে তা দাড়ায় ৪০ হাজারের উপরে। হুহু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা সাথে প্রতিদিনই ভাঙ্গছে মৃত্যুর আগের রেকর্ড। এ ভয়াবহতার মধ্যে সরকার লকডাউন শিথিল করছে।লকডাউনের কারনে দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে। একইনসাথে থমকে আছে মানুষের জীবনধারা। শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বের অনেক দেশই এই পরিস্থিতি সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে। এই নানামুখি সমস্যার মধ্যে সরকারে লকডাউন খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ।
অনেকেই মনে করছেন অারো কিছুদিন লকডাউন রেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অভিমত অনুসারে চললে ভাল হত। কঠোর নজরদারিতে রেখে আরও কিছুদিন চললে স্বাস্থ্য ঝুকির মাত্রটা কিছুটা হলেও হ্রাস পেতো। এই ভাইরাস বিস্তার ও ঝুকি নিয়ন্ত্রণ করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ না করলে আরও বিপদ হতে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতে এই সংক্রমণ আরও কিছুদিন প্রকট থাকবে। এমতাবস্থায় ব্যক্তিগত সতর্কতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
মানুষের জীবনধারণের জন্য ও অর্থনীতির ক্ষতি এড়ানো জন্য অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনঃশুরু করার বিকল্প যেহেতু নেই,সেহেতু সংক্রমণ নূন্যতম মাত্রায় রাখায়ই হবে আমাদের কাম্য। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এসবের গাফিলতি করলে কী ভয়াবহ হতে পারে পরিস্থিতি , এ ব্যাপারে সমাজে সবাইকে সচেতনত করতে হবে। আক্রান্তের দ্রুত চিকিৎসা দিতে হবে। দায়িত্বশীলতার ব্যাপারে অধিকতর সজাগ থাকতে হবে।
স্বাস্থ্য নাকি অর্থনীতি’ কোনটা বড়- এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেওয়া যেহেতু কঠিন, সেহেতু সচেতনতায়ই আমাদের ভরসার পথ বেছে নিতে হবে। আমরা করোনা সংক্রমণে ঊর্ধ্বমুখী অবস্থান করছি। আমাদের মনে রাখতে হবে, যেহেতু করোনার ভ্যাকসিন কিংবা সুনির্দিষ্ট ওষুধ এখনও আবিস্কৃত হয়নি, তাই প্রধান অবলম্বন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
লেখকঃ শাহরিয়ার হক শুভ
শিক্ষার্থী, আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।