1. asifiqballimited@gmail.com : Asif Iqbal : Asif Iqbal
  2. Kamrulsohan55@gmail.com : কামরুল সোহান : কামরুল সোহান
  3. khoshbashbarta@gmail.com : ইউনুছ খান : ইউনুছ খান
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন
খোশবাস বার্তা

আমাদের ঘূর্ণিঝড় ভাবনা

তাজুল মারুফ, সহকারী শিক্ষক, মনপুরা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা।
  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০
  • ১৭৪৭ বার পঠিত
ঘূর্ণিঝড়
সমুদ্রে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের পরিপূর্ণতা আসে তার জলোচ্ছ্বাসে। সকল ঘূর্ণিঝড়ে অবশ্য জলোচ্ছ্বাস হয় না।ভূপৃষ্ঠে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ে রীতিমতো মরুঝড় বয়ে যেতে পারে বাতাসের গতিবেগ, গতিমুখ ও স্থান বা আবহাওয়া প্রভাবক হিসেবে মিলে গেলে। আমাদের এযাবৎকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় গত শতকের ’৭০-এর জলোচ্ছ্বাস। বিশ্বের ডেডলিস্ট ন্যাচারাল ডিসেস্টার- এর ভীতিকর পঞ্চম স্থানে আছে পরিচিত ভোলা জলোচ্ছ্বাসটি। একসময় মনে করতাম অদৃশ্য ক্ষমতার কুদৃষ্টি বা ঈশ্বর অসন্তুষ্ট হলে এসকল ঘূর্ণিঝড় হয়। অবশ্য অতীতে বিজ্ঞানের দুর্দিনে মানুষ এমন অনেক অলৌকিকতায় আস্থা রেখেছে। আধুনিক জ্ঞান, মনীষা ও বৃত্তির ঊর্ধ্বমুখীনতায় মানুষ সজাগ হয়েছে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি, তার বিস্তার ও ফিক্সড জোন সম্পর্কে।
ঘূর্ণিঝড় কেন হয়? এটা আজকাল নবম দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও বলতে পারে। বিশ্বে প্রভাব বিস্তারে শ্রেষ্ঠ পঁয়ত্রিশটি সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের ছাব্বিশটিই আমাদের ‘বে অব বেঙ্গল’ উদ্ভূত। এটারও বরং একটা কারণ আছে। সাইক্লোনের মূল কারণ আজকাল আমাদের জানা কথা। বিষুবীয় অঞ্চলে গ্রীষ্মের সময় বা গ্রীষ্মের শেষদিকে পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশ উত্তপ্ত হয়ে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ুর ঘনত্ব কমে উপরে উঠে যায়। অতঃপর যে ফাঁকা স্থানটি সৃষ্টি হয় তা পূরণের জন্য মেরুদেশের শীতল বায়ু উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণে বিষুবরেখার দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়। পৃথিবীর ঘূর্ণনে সৃষ্ট কোরিওলিস ( Coriolis ) ফোর্স (ফরাসি বিজ্ঞানী গ্যাসপার-গুস্তাভ কোরিওলিস-এর ১৮৩৫ খ্রিষ্টাব্দে গাণিতিক ব্যাখ্যায় প্রমাণিত পদ্ধতি)-এর কারণে এ বায়ু সম্মুখ বরাবর প্রবাহিত না হয়ে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁ দিকে বেঁকে যায়। ফলে আমরা উত্তর গোলার্ধে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরতে দেখি। বিষুবীয় অঞ্চলের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূলে থাকলেও কোরিওলিস ফোর্স ন্যূনতম হওয়ায় বিষুবরেখার শূন্য থেকে পাঁচ ডিগ্রি অক্ষরেখার মধ্যে কোন ঘূর্ণিঝড় হতে দেখা যায় না। বিষুবরেখার ১০ থেকে ৩০ ডিগ্রির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়।
আমাদের অজ্ঞাত নয় বাংলাদেশের সবেধন নীলমণি ‘বে অব বেঙ্গল’ ও ভাটির দেশটি বিষুবরেখার ১০-৩০ ডিগ্রির মধ্যে অন্তঃস্থিত। তাই এই অংশে ঘূর্ণিঝড় গোগ্রাসে আমাদের ফি বছরে চোখ পাকানোটা অতি স্বাভাবিক। উষ্ণ জলও এখানে অধিক ঘূর্ণিঝড়ের অন্য কারণ।
শৈশবের বিশ্বাস আর যৌবন ও বৃদ্ধকালের বিশ্বাস, ধারণা বা আদর্শে ফারাক থাকাটা অতি কথন কিছু নয়। মা যখন দেখতেন ঘরের বাহিরে প্রবল ঝড় বয়ে যাচ্ছে,আমাদের টিনের ঘরের উপর চালা বা টুয়ায় প্রকম্পন শুরু হয়ে গেছে,দরজায় বাতাসের প্রবল ধাক্কা; তখন তিনি বলতেন, “বাবা আযান দে, আযান দে।” আমি সন্ত্রস্তচিত্তে উচ্চস্বরে উপরওয়ালার নাম জপতাম। অবশ্য ওসব সেকালের কথা যখন আমরা নব্বইয়ের দশক গায়ে মেখেছি। নব্বইয়ের দশকের অনেকেই হয়তো পারিবারিক এই ব্যাপারগুলোর সাক্ষ্য বহন করবেন যদি তারা প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে ওঠেন। এক মায়ের এক ছেলে আযান দিলে তুফান থেমে যায়, পিঁড়িকে উল্টোপৃষ্ঠায় উঠোনে নিক্ষেপ করতে পারলে প্রবল ঝড় বা বৃষ্টি থেমে যাবে অথবা আমি জায়নামাযে লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্জোয়ালিমিন পড়তাম, আযান দিতাম। ঝড় অবশ্য কারো কথায় কর্ণপাত করতো না।
খোশবাস বার্তা

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
সত্বাধিকার © খোশবাস বার্তা ২০১৬- ২০২৫
ডেভেলপ করেছেন : TechverseIT
themesbazar_khos5417