আর তাদের বাঁচাতেই ১১ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবর। এসব প্রস্তাবনা তিনি ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে উল্লেখ করে পোস্ট দিয়েছেন। সঙ্গীতে পেশাজীবীদের অনৈক্যের বিভিন্ন বিষয় এবং নিজের চেষ্টার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন,
‘প্রান্তিক মিউজিশিয়ানদের ঘরে ঘরে এখন হাহাকার। করোনা বুঝিয়ে দিয়েছে অনৈক্যের ফলাফল কী হয়; এখন জোরে কান্না করার ক্ষমতাও নেই।
পেশা বদলানোর চিন্তা ঢুকে গেছে মিউজিশিয়ানদের মাথায়। মাত্র তিন মাসের ধাক্কাই নিতে পারেনি ইন্ডাস্ট্রি, সামনে তো কঠিনতর সমস্যা আসছেই। তারপরও উপযাচক হয়ে শেষবারের মতো একটা পরামর্শ দিচ্ছি।
১| অবিলম্বে গীতিকার-সুরকার-কণ্ঠশিল্পীদের সমন্বয়ে কপিরাইট সোসাইটি গঠন করতে হবে।
২| এ সোসাইটির শুরু থেকেই রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি মুক্ত রাখতে হবে।
৩| সময় দিতে পারবে এমন গ্রহণযোগ্য সঙ্গীত ব্যক্তিত্বদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা ম্যানিফেস্টো তৈরি করতে হবে।
৪| যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পীদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে স্বার্থসংরক্ষণ প্লান করতে হবে।
৫| কপিরাইট অফিস কর্তৃক গীতিকার-সুরকার-শিল্পী এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের রেভিনিউ শেয়ারিং নির্ধারণ করতে হবে।
৬| কপিরাইট আইন সংশোধন করে চলচ্চিত্রের গানের ওপর থেকে প্রযোজকের একচ্ছত্র অধিকার খর্ব করতে হবে।
৭| সরকারি-বেসরকারি রেডিও এবং টেলিভিশন চ্যানেলে যে কোনো পন্থায় প্রচারিত গানের রয়্যালিটি নিশ্চিত করতে হবে।
৮| সিনিয়রিটি ও দক্ষতা বিবেচনায় গ্রেডেশন সিস্টেম এবং আইডি কার্ড চালু করতে হবে।
৯| প্রত্যেকটি পেশাদার শো থেকে কপিরাইট সোসাইটির জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ পার্সেন্টেজ কাটতে হবে যেন গীতিকার-সুরকাররা সেখান থেকে তাদের সৃষ্টির ন্যায্য হিস্যা পায়।
১০| মিউজিকের প্রত্যেক অংশের হিস্যাদারকে অবশ্যই আয়কর ফাইল খুলতে হবে।
১১| কারও জন্য সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন হলে তাকে কপিরাইট সোসাইটির নিবন্ধিত হতে হবে।
এ কর্মযজ্ঞ চালাতে তিনি ভারতীয় কপিরাইট অ্যাক্ট এবং ভারতীয় কপিরাইট সোসাইটির পলিসি ফলো করা সর্বোত্তম বলেও জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের মিউজিশিয়ানদের উদাহরণ সামনে রয়েছে।
আমার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরলাম। অবিলম্বে এ ১১ পয়েন্টে কাজ করতে না পারলে অভাবের সঙ্গে সংসার ভাঙ্গা শুরু হবে পাইকারি হারে। নীরব দুর্ভিক্ষে আছে সঙ্গীতাঙ্গন, অতীতে তৈলপ্রাপ্ত সচ্ছলরা ক্ষতিগ্রস্তদের ফোন ধরবে না, তারা করাপ্টেড পলিটিশিয়ানদের মতো বিদেশে সেকেন্ড হোম তৈরি করে রেখেছে। সাহায্যের চিন্তা না করে অধিকার আদায়ে এখন সচেষ্ট হতে হবে।
ভিখারি নয়, যোদ্ধা হোন, নিজের অধিকার ছিনিয়ে আনুন। অন্যথায় এ খাত থেকে খাওয়ার জন্য ভবিষ্যতে আর কেউ মুড়িও অফার করবে না।’