কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) পালনের জন্য বিভিন্ন পীর সাহেব,মসজিদ,মাদ্রাসা গুলো কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জুলুস, মহানবী (সা.)-এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
ইলাশপুর মাগুনবাড়ি গাউছিয়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা হাবিবুর রহমান খোশবাস বার্তাকে বলেন, প্রতিবছর আমরা এই বিশেষ দিনটির অপেক্ষায় থাকি।এই দিনে সারা জাহানের রহমত নূরনবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) পৃথিবী আলোকিত করতে এসেছেন।আমরা আমাদের মসজিদ কমিটির উদ্যোগে প্রতি বছর সুন্দর সুশৃঙ্খল ভাবে এই আয়োজন করে থাকি।
রবিউল আউয়াল মাসের শুক্লপক্ষে সোমবার প্রত্যুষে বা ভোরবেলায়, তথা উষালগ্নে। তাঁর বেলাদাত ও ওফাত ১২ রবিউল আউয়াল হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। তদুপরি প্রিয় নবী (সা.)-এর আগমন ও প্রস্থান একই দিনে, একই সময়ে—এ কথাও সর্বজন বিদিত। তাহলে এই দিনে জন্মোৎসব পালন করা হবে, নাকি প্রস্থানের শোক পালন করা হবে? কথায় আছে: সৃষ্টির জন্য যাঁদের সৃষ্টি, তাঁরা চির অমর।
রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে ৬৩ বছর বয়সে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে ১১ হিজরির ঠিক এদিনেই তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নেন। দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। বাংলাদেশে দিনটি সরকারিভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালিত হচ্ছে।
এ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া পত্রিকায় ক্রোড়পত্র ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচারিত হচ্ছে।
৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের এদিনে আরবের মক্কা নগরীর সম্ভ্রান্ত কুরাইশ গোত্রে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন খাতামুন নাবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)। একসময় গোটা আরব অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা। এ যুগকে বলা হতো আইয়ামে জাহেলিয়াত।
তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল এবং করত মূর্তিপূজাও। এ অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহতাআলা রাসুলুল্লাহকে (সা.) প্রেরণ করেন এ ধরাধামে।
মহানবী (সা.) অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। পঁচিশ বছর বয়সে মহানবী বিবি খাদিজা নামের এক ধনাঢ্য নারীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়তপ্রাপ্ত হন। আল্লাহতাআলার নৈকট্য লাভ করেন।
পবিত্র কোরআন শরিফে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীই সৃষ্টি করতেন না।’ এসব কারণে এবং তৎকালীন আরব জাহানের বাস্তবতায় এদিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করে থাকে।