আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম আলাইহিস সালামের সময়ে এই কুদরত চালু রেখে ছিল যে, হযরত হাওয়া আলাইহিস সালামের প্রতিটি গর্ভ থেকে দুইটি করে সন্তান প্রসব করতেন
তাফসীরে কুরতুবীতে বলা হয়েছে-
হযরত হাওয়া আলাইহিস সালামের প্রত্যেক গর্ভ থেকে একজন ছেলে এ একজন মেয়ে সন্তান প্রসব করতেন। তবে শুধু হযরত শীশ আলাইহিস সালাম একা জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হাবিলের পরিবর্তে ছিলেন। (তাফসীরে কুরতুবী ৬ খন্ড ৮৮ পৃষ্ঠা)
হযরত আদম আলাইহিস সালামের শরীয়তের নিয়ম-কানুন ছিল, প্রত্যেক গর্ভের সন্তান জমজ ভাইবোন হিসেবে পরিচিত ছিল। তাই একই গর্ভের সন্তান পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম ছিল। আর এক গর্ভের সন্তানের সাথে অন্য গর্ভের বিবাহ হত। ঘটনাক্রমে কাবিলের সহজাত বোন ইকলিমা ছিল পরমা সুন্দরী এবং হাবিলের সহজাত বোনটি ছিলো লিয়ুজা ছিল শ্যামল বর্ণের। বিবাহের নিয়ম অনুযায়ী হাবিল বিয়ে করবে ইকলিমাকে। আর কাবিল বিয়ে করবে সাজাকে। কাবিল শরীয়তের বিধান লঙ্ঘন করে তার মতের স্বপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করল।
১। ইকলিমা আমার সাথে জন্মগ্রহণ করেছে তাই তাকে বিবাহ করার অধিকার আমার বেশি
২। অন্যদিকে আমি হাবিলের চেয়ে বড়, তাই শ্রেষ্ঠটি পাওয়াই আমার অধিকার।
হযরত আদম আলাইহিস সালাম কাবিলকে বুঝানোর চেষ্টা করলেন তবুও সে তার সিদ্ধান্তে অটল ছিল। হাবিল ও কাবিলের মতভেদ দূর করার জন্য হযরত আদম আলাইহিস সালাম আল্লাহর উদ্দেশ্যে তাদেরকে কুরবানী দিতে বলেন। যার কুরবানী গৃহিত হবে সে ইকলিমা বিবাহ করবে। তারা সিদ্ধান্ত মেনে নেয় এবং প্রত্যেকেই কুরবানি দিতে সম্মত হয়। কাবিল কৃষক ছিলেন, তাই সে তার ফসল থেকে নিম্নমানের শস্য,গম ইত্যাদি কুরবানির জন্য পেশ করে। হাবিল ভেড়া,দুম্বা ইত্যাদি পশু পালন করতো। সে একটি উৎকৃষ্ট দুম্বা কুরবানি করল। তখন নিয়ম ছিলো, যার কুরবানী আল্লাহর দরবারে কবুল হত, তার কুরবানীকে আকাশ থেকে আগুন এসে জ্বালিয়ে দিত। আর যার কুরবানী কবুল হত না। তার কুরবানী আপন অবস্থায় পড়ে থাকত। নিয়ম অনুযায়ী আকাশ থেকে আগুন এসে হাবিলের কুরবানীকে আকাশে উড়িয়ে নিয়ে গেল। আর কাবিলের কুরবানীকৃত শস্য নিজ অবস্থায় পড়ে রইল। যেমনিভাবে মহান আল্লাহ তালায়া পবিত্র কুরআন মাজীদের সূরা-আল মায়েদাহ-র ২৭ নং আয়াতে ইরশাদ করেন।
” আপনি তাদেরকে আদম আলাইহিস সালামের দুই পুত্রের বাস্তব অবস্থা পাঠ করে শোনান। যখন তারা উভয়েউ কুরবানী করেছিল। তখন একজনের কুরবানী কবুল হল না”।
এতে প্রমাণিত হয় যে, হাবিলের কুরবানী কবুল হয়েছে। আর কাবিলের কুরবানী কবুল হয়নি
লিখেছেনঃ
মুহাম্মদ মাছুম বিল্লাহ
শিক্ষার্থীঃ জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া, চট্রগ্রাম।
বিভাগঃ আল-হাদিস এন্ড ইসলামিক স্ট্যাডিজ
দ্বিতীয় বর্ষ।