1. asifiqballimited@gmail.com : Asif Iqbal : Asif Iqbal
  2. Kamrulsohan55@gmail.com : কামরুল সোহান : কামরুল সোহান
  3. khoshbashbarta@gmail.com : ইউনুছ খান : ইউনুছ খান
বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন
খোশবাস বার্তা

সেহরি নয় সাহারি বা সাহুর বলুন

লেখকঃ সাইফুল্লাহ বিন নামর, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
  • প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০
  • ১১০৩ বার পঠিত
Khosbasbarta
সাহারী বা সাহুর শব্দ আরবী সাহারুণ শব্দমূল হতে উদ্ভূত। সাহারুণ শব্দের অর্থ হল ভোররাত বা রাতের শেষাংশ। মুমিন মুসলমানগণ রোযা পালনের উদ্দেশ্যে শেষ রাতে ফজরের সময়ের পূর্বে যে আহার করে থাকেন তাকে সাহারী বলা হয়।
যেমন- আল্লাহ সুবহানুহু ওয়া তা’আলা বলেন, ﻧَّﺠَّﻴْﻨَﺎﻫُﻢ ﺑِﺴَﺤَﺮ (নাজ্জাইনাহুম বিসাহারিন) অর্থাৎ আমি তাদের (লূত নবীর পরিবারবর্গকে) রাতের শেষ ভাগে মুক্তি দিয়েছিলাম। (সূরা কামার, আয়াত নং ৩৪)
কোরআন কারীমের অন্যত্র বলা হয়েছে,
ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﺘَﻐْﻔِﺮِﻳﻦَ ﺑِﺎﻷَﺳْﺤَﺎﺭِ
অর্থাৎ যারা সাহারীর সময় ক্ষমা প্রার্থনাকারী। (আলে ইমরান, আয়াত নং ১৭)
ﻭَﺑِﺎﻟۡﺎَﺳۡﺤَﺎﺭِ ﻫُﻢۡ ﻳَﺴۡﺘَﻐۡﻔِﺮُﻭۡﻥَ
অর্থাৎ তারা সাহারীর সময় ক্ষমা প্রার্থনা করে। (সূরা যারিয়াত, আয়াত নং ১৮)
আমর ইবনে আস (রাঃ)হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻦَ ﺻِﻴَﺎﻣِﻨَﺎ ﻭَﺻِﻴَﺎﻡِ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﺃَﻛْﻠَﺔُ ﺍﻟﺴَّﺤَﺮِ অর্থাৎ আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবদের (ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের) রোজার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, আকলাতুস সাহারী বা শেষ রাতের খাওয়া।’ (মুসলিম হা/১০৯৬।)
সাহারী খাওয়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। সাহারী খাওয়ার জন্য রাসূল (সাঃ) নির্দেশ দিয়ে বলেন, ﺗَﺴَﺤَّﺮُﻭْﺍ ﻓَﺈِﻥَّ ﻓِﻰ ﺍﻟﺴَّﺤُﻮْﺭِ ﺑَﺮَﻛَﺔً ‘তোমরা সাহারী খাও। কেননা সাহারীতে বরকত রয়েছে’। ( বুখারী হা/১৯২৩; মুসলিম হা/১০৯৫।)
সাহারী গ্রহণের ফযীলত সম্পর্কে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেমন রাসূল (সাঃ) বলেন, ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﻣَﻼَﺋِﻜَﺘَﻪُ ﻳُﺼَﻠَّﻮْﻥَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﺘَﺴَﺤِّﺮِﻳْﻦَ অর্থাৎ ‘নিশ্চয়ই সাহারী গ্রহণকারীদের জন্য আল্লাহ রহমত করেন ও ফেরেশতাগণ দো‘আ করেন’। (আহমাদ হা/১১১০১)
অন্যত্র তিনি বলেন, ﺇِﻧَّﻬَﺎ ﺑَﺮَﻛَﺔٌ ﺃَﻋْﻄَﺎﻛُﻢُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻳَّﺎﻫَﺎ ﻓَﻼَ ﺗَﺪَﻋُﻮْﻩُ ‘নিশ্চয় সাহারী বরকতপূর্ণ, আল্লাহ তা‘আলা বিশেষভাবে তা তোমাদেরকে দান করেছেন। অতএব তোমরা তা (সাহারী পরিত্যাগ করো না’।( নাসাঈ হা/২১)
তিনি আরো বলেন, ﺍَﻟْﺒَﺮَ ﻓِﻲْ ﺛَﻼَﺛَﺔٍ : ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻤَﺎﻋَﺔِ ﻭَﺍﻟﺜَّﺮِﻳْﺪِ ﻭَﺍﻟﺴَّﺤُﻮْﺭِ ‘তিনটি বস্তুতে বরকত রয়েছে- জামা‘আতে, ছারীদে (এ প্রকার খাদ্য) এবং সাহারীতে’। (ছহীহুল জামে‘ হা/২৮৮২)
অন্য বর্ণনায় এসেছে,ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺟَﻌَﻞَ ﺍﻟْﺒَﺮَﻛَﺔَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﺤُﻮْﺭِ ﻭَﺍﻟْﻜَﻴْﻞِ ‘নিশ্চয় আল্লাহ বরকত রেখেছেন সাহারীতে পরিমাপে’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/১২৯১)
তিনি বলেন ﺗَﺴَﺤَّﺮُﻭْﺍ ﻭُﻟَﻮْ ﺑِﺠُﺮْﻋَﺔٍ ﻣِﻦْ ﻣَﺎﺀٍ ‘সাহারী গ্রহণ যদিও এক ঢোক পানি দিয়েও হয়’। (ছহীহ ইবনে হিব্বান]
উপরুক্ত আয়াতে কারীমা ও হাদীস সমূহ হতে সাহার, আসহার, সাহুর ইত্যাদি শব্দসমূহ পাওয়া যায়। আমাদেরকে সাহারী কিংবা সাহুর শব্দদ্বয় ব্যবহার করতে হবে। এটাই বিশুদ্ধ শব্দ।
উল্লেখ্য, সেহরী শব্দটি আরবী সেহরুন/সিহরুন হতে আগত। সিহরুণ শব্দের অর্থ জাদু, ধোঁকা, ব্ল্যাক ম্যাজিক, কুফরী কালাম প্রভৃতি। যেমন-পবিত্র কুরআনে আছে,ﻳُﻌَﻠِّﻤُﻮﻥَ ﭐﻟﻨَّﺎﺱَ ﭐﻟﺴِّﺤﺮَ
(ইউয়াল্লিমুনান নাসাস সিহরা) অর্থাৎ তারা লোকদেরকে জাদু শেখাত। [সূরা বাকারা, আয়াত নং ১০২]
সুতরাং সেহরী খাওয়া মানে হলে যাদু-মন্ত্র ও কুফরী কালামের সাথে সম্পর্কীত কোন কিছু খাওয়া।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই সেহরী শব্দ ব্যবহার করেন। শুধু সাধারণ মানুষই নয়, রমজান উপলক্ষ্যে ছাপানো বিভিন্ন ক্যালেন্ডার, কলাম, রচনা ইত্যাদিতেও এই ভুল শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অনেক আলেমদেরকেও দেখা যায় ওয়াজ-নসীহতে সেহরী শব্দটি ব্যবহার করেন। তখন আর দুঃখ বলার জায়গা থাকে না। তাই আসুন, আমরা শুদ্ধতার চর্চা করি। সেহরী নয়, বরং সাহারী বা সাহুর বলি।
খোশবাস বার্তা

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
সত্বাধিকার © খোশবাস বার্তা ২০১৬- ২০২৪
ডেভেলপ করেছেন : TechverseIT
themesbazar_khos5417