1. asifiqballimited@gmail.com : Asif Iqbal : Asif Iqbal
  2. Kamrulsohan55@gmail.com : কামরুল সোহান : কামরুল সোহান
  3. khoshbashbarta@gmail.com : ইউনুছ খান : ইউনুছ খান
বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন
খোশবাস বার্তা

করোনা এবং আম্মুর যুদ্ধজয়ের মাস্টারপ্ল্যান

তাসমিয়া জাহান, ঢাকা
  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ৪ মে, ২০২০
  • ১১৮৩ বার পঠিত

এই লেখাটা আমি লিখছি আম্মুর পক্ষ থেকে। লেখার ভাবনা ও তাগিদ দুটোই আম্মুর থেকে পাওয়া। আমার মা পুরোদস্তুর গৃহিণী হলেও পৃথিবীর ভালমন্দ নিয়ে তিনি ভাবেন।

একদিন আম্মুকে বললামঃ ভাবতো একবার, আমাদের মত জনবহুল দেশে করোনার জন্য কতদিন মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব। লাখ লাখ অভাবী মানুষকে ঘরে বসিয়ে খাওয়ানো কী চাট্টিখানি কথা?

আম্মু বলল, সম্ভব। দেশের প্রায় সতের কোটি লোকের থেকে মাথাপিছু এক টাকা তুললে ওঠে সতের কোটি টাকা। দুই টাকা করে তুললে ওঠে এর ডাবল। বড়লোক তো নেহাত কম নাই। স্থানীয় প্রশাসন আর স্বেচ্ছাসেবকরা এক হলে কয়েকদিনের মধ্যে এলাকার বস্তিবাসীর সংখ্যা, আয়ের উৎস, কতজনের ভরণপোষণের দায়িত্ব এর একটা ছোটখাটো তালিকা বানিয়ে ফেলাও কঠিন না। কাজটা করতে পারলে ত্রাণ বণ্টন সুষম হবে। একজন তিনবার ত্রাণ পাবে আরেকজন একবারও পাবে না, তা আর হবেনা।

আম্মুর কথায় যুক্তি আছে। স্বেচ্ছাসেবকরা কিন্তু নানা স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে। লিস্ট ধরে কাজ এগোলে এর সুফল আরও ভালভাবে পাওয়া যেত। ডাক্তাররা এই পরিস্থিতিতে আমাদের হিরো। তারা বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আম্মু ডাক্তার আর রোগীদের মাঝে কাঁচের ব্যবধান আর টেলিফোন রাখার কথা বলল। এতে বেশিক্ষণ রোগীর সংস্পর্শে না থেকেও অনেকক্ষেত্রে চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব। এ উদ্যোগ এখনো কোথাও নেয়া হয়েছে কিনা জানিনা। আম্মুর কাছেই এ আইডিয়া প্রথম শুনলাম। আম্মু যে কতটা বুদ্ধিমতী তা তো বোঝাই যায়। আমি চাই আম্মুর ভাবনাগুলোর সাথে অন্যরাও পরিচিত হোক। ‘করোনা-কালের জীবনগাথা’য় লেখাও পাঠাতে বললাম। আম্মু এমনিতেই লাজুক প্রকৃতির। সাথে শঙ্কিতও। এত বছর পর তার কলমে লেখা আসবে কী! বাধ্য হয়েই আম্মুর কথাগুলা আমার লিখতে বসা। শেষ করতে চাই আম্মুর ভাবনায় করোনার শিক্ষা নিয়ে।

মাইক্রোফোনের মতন মুঠো পাকিয়ে যখন আম্মুকে বললামঃ বলুন, করোনা থেকে আমরা কি শিখলাম। আম্মু গম্ভীর হয়ে বলল, ঘরবন্দী থাকার যে কষ্ট সেটা এখন সবাই বুঝতে পারছে। করোনা ছাড়াও কিন্তু অনেকের ঘরবন্দি জীবন কাটাতে হয়। তাদের কথাও আমাদের ভাবা উচিৎ। মনে পড়ল আমার এক অন্ধ বন্ধুর কথা। অন্যের সহযোগিতা ছাড়া বাইরে বেরোনো যার পক্ষে অসম্ভব।

বুঝতে পারলাম আম্মুর মনের চাপা অভিমান। আব্বু আর আমাদের তিন বোনের দেখভাল করতে করতে যে মায়ের অন্যকিছু হয়ে ওঠা হলনা, জাস্ট গৃহিণী থেকে গেলেন, তার কষ্ট। করোনা কেটে যাক, এ কঠিন সময় থেকে পাওয়া শিক্ষাগুলো জীবনে স্থায়ী হোক, এটাই কামনা।

খোশবাস বার্তা

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
সত্বাধিকার © খোশবাস বার্তা ২০১৬- ২০২৪
ডেভেলপ করেছেন : TechverseIT
themesbazar_khos5417